|
সিন্ডিকেট বাণিজ্যে হারাতে বসেছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারPublished : Sunday, 7 August, 2022 at 7:46 PM |
|
এস এম রহমান পারভেজ: মালয়েশিয়ার জনশক্তি রপ্তানি বাজার নিয়ে চলছে ভানুমতীর খেল। সেই খেলায় এখন গোল শুধু গোলই হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি বাজারটি অনেক বড় ছিলো বাংলাদেশের জন্য। সে কারনেই ২০০০ সালের পর থেকে কিছু মানুষরূপি শকুনের নজর পরে এখানে। প্রথম বিএনপি সরকারের আমলে সিলভার লাইনরিক্রুটিং কোম্পানির মালিক সেলিম টাকার বস্তা নিয়ে আসে মালয়েশিয়ায়। তখন কেএলসিসি টুইন-টাওয়ারের কাছে একটি নামি-দামি বিল্ডিংএ অনেক বড়সড়ো অফিস করে। তখন তার সাথে মালয়েশিয়ার কিছু প্রবাসী দালালচক্র সিন্ডিকেট করার চেষ্টা করেন। তবে শুরুর কিছু দিনের মধ্যে মালয়েশিয়ার জনশক্তি নিয়োগকর্তাদের তোপের মুখে তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৭ সনে মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়ার ঘোষণা দিলে আগ্রহী কোম্পানিগুলো মালয়েশিয়ার সরকারি অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি শ্রমিক নেয় নিজ নিজ কোম্পানিতে। তখন কিছু দিনের মধ্যে ৫ থেকে ৭ লক্ষ শ্রমিক মালয়েশিয়ায় চলে যায়। একসাথে অনেক কর্মী যাওয়ায় প্রথমে একটু এলোমেলো হলেও কিছুদিন পরে তা ঠিক হয়ে যায়। সেই এলোমেলোকে পুঁজি করে ২০১০হতে আবার নতুন করে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ান ব্যবসায়ী দাতুশ্রী আমিনুল ইসলাম আমিনের নেতৃত্বে বেস্টিনেট কোম্পানির সিস্টেমে সিন্ডিকেট শুরু। মালয়েশিয়ায় কোন কোম্পানিতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে হলে বাংলাদেশী ১০টি রিক্রুটিং কোম্পানি এবং মালয়েশিয়ান কোম্পানি বেস্টিনেটের মাধ্যমে নিতে হবে। সেই সিন্ডিকেট তেমন কোন কর্মী মালয়েশিয়ায় নিয়োগ দিতে পারিনি। এই সিন্ডিকেটের দর কষাকষির কারণে ২০০৭ হতে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তেমন কোন উল্লেখযোগ্যকর্মী যেতে পারেনি মালয়েশিয়ায়। করোনাকালিন ২০১৯ -২০২১ সালে মালয়েশিয়ায় লকডাউনে অনেক কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায়। সেসময়ে অনেক শ্রমিক কাজ হারিয়ে দেশে ফিরে আসেন। আশায় ছিলো আবার সবকিছু ঠিক হলে কোম্পানি ভিসা পারমিট পাঠিয়ে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাবে।করোনাকালিন সময়ে লকডাউনের কারনে এগ্রিকালচার সেক্টর, পামাওয়েল সেক্টরসহ বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে প্রডাকশন বন্ধ হলে অর্থনৈতিক খাত ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।করোনা মহামারির মধ্যে অনেক কোম্পনি, ফ্যাক্টরি, ওপেন করে দিলে শ্রমিক সংকটে পড়ে মালয়েশিয়া। সেই সুযোগে আবারও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমিনুল ইসলাম আমিন বাংলাদেশের ২৫রিক্রুটিং এজেন্সিকে নিয়ে কঠিন সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট গড়ে তুললে দুই দেশের মন্ত্রীকে ম্যানেজ করে। মন্ত্রীদেরকে সিন্ডিকেট সংক্রান্ত প্রশ্ন করলে মালয়েশিয়ান শ্রমমন্ত্রী বলে বাংলাদেশ সরকার ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সি মাধ্যমে শ্রমিক পাঠাবেন তা না হলে দুর্নীতি হবে। একই কথা বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীও বলেন, মালয়েশিয়ান সরকার ২৫এজেন্সির মাধ্যমে শ্রমিক নেয়ার অনুমতি দিবেন আমার কিছু করার নেই। আসল কথা সবাইকে বোকা বানিয়ে দুই দেশের মন্ত্রীদের স্বার্থের ভুতে ধরেছে। আর মাঝখানে সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য দেশের মানুষের রক্ত চুষে নিবে। মালয়েশিয়ায় আমার ৩০ বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে বলছি মালয়েশিয়া ১৯৯০সালের দিকে আমাদের পরিচিত কিছু কোম্পানির মালিকগন। আমাদের আচার আচরণ ব্যবহার এবং কঠিন পরিশ্রম কাজের দক্ষতা দেখে ভালোবাসার খাতিরে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। ১৯৯০ হতে প্রথম কলিং ভিসায় শ্রমিক আসে। ১৯৯০হতে ১৯৯৭ পর্যন্ত সব কোম্পানির নিয়োগকর্তা বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়ার জন্যে মালয়েশিয়ার সরকারের লেভিসহ সকল খরচ বহন করে আমাদেরকে ৫০০/১০০০রিংগিত দিয়ে খুশী করতো। আমরাও বাংলাদেশে অনেক রিক্রুটিং এজেন্সিকে বিনে পয়সাতে ভিসা দিয়েছি। তখন খুবই কম খরচে মালয়েশিয়ায় গেছে অনেকে।
১৯৯৭ সনের পর থেকে আস্তে আস্তে ব্যবসা উল্টো পথে যেতে শুরু করলো। ১৯৯০ সনে যারা শ্রমিক হিসেবে মালয়েশিয়ায় এসেছিলেন তাদের মধ্যে অনেকে ব্যবসায়ী হয়ে গেলেন মার্কেটিং এ কম্পিটিশন এসে গেলো বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে নিয়োগকর্তাকে বুঝতে চেষ্টা করছে। ২০০০ সনে দেখি ব্যবসায়ী আরো বেড়ে গেছে এখন বিভিন্ন কোম্পানিতে গিয়ে মার্কেটিং করছে।
আমি জানি নিয়োগকর্তার প্রয়োজনে তার চাহিদা অনুযায়ীকর্মী পাঠালে নিয়োগকর্তা শ্রমিক নেয়ার সকল খরচ বহন করবে এবং এজেন্সিকে ভালোকর্মী পাঠানোর জন্যে সার্ভিস চার্জ দিবে। যেটা দেখি অন্য দেশ থেকে হাউসমেইড / শ্রমিক আনতে হলে ৩মাসের বেতন অগ্রিম দিয়ে আনতে হয়।বাংলাদেশের জন্য উল্টো সিস্টেম শ্রমও দিবি সাথে টাকাও দিবি জিবন ভর খাটবি ফাউ শুধু অসাধু কিছু বাটপারদের কারনে। বাকিটা শেষ করে দিচ্ছে সিন্ডিকেট নামধারি হায়েনার দলেরা নিজের সার্থের কারনে। আজকের সিন্ডিকেট না করে সবার জন্য উন্মুক্ত থাকতো যে যার মত মার্কেটিং করে নিয়োগকর্তার চাহিদা অনুযায়ী কর্মী পাঠাতো কম খরচে এতদিনে মালয়েশিয়ায় ৫ থেকে ৭ লক্ষ শ্রমিক যেতে পারতো। পৃথিবীতে চলছে যুদ্ধ সব কিছুর দাম উর্ধগতি দেশের দিকে ধেয়ে আসছে অর্থ সংকট এই মূহুর্তে শ্রমিকের পাঠানো অর্থ রেমিট্যান্স হবে পরমাণু বোমার চাইতে শক্তিশালি। অনেক কথা লিখে শেষ করা যাবেনা শুধু একটু বলি মালয়েশিয়ার জনশক্তি রপ্তানির বাজার সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়ে অতি জরুরি ভাবে নিয়োগকর্তার চাহিদা অনুযায়ীকর্মী পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।
এবিনিউজ টুয়েন্টিফোর বিডিডটকম//এফ//
|
|
1 |
|
 |
2 |
|
 |
3 |
|
 |
4 |
|
 |
5 |
|
 |
-
|
সম্পাদক: শাহীন চৌধুরী
উপদেষ্টা সম্পাদক: হেলেনা বিলকিস চৌধুরী, নির্বাহী সম্পাদক: বরুণ ভৌমিক নয়ন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: সৈয়দ আফজাল বাকের, ঢাকা অফিস: ২/১ হুমায়ুন রোড (কলেজ গেট) মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭ ফোন: ৮৮-০২-৪৮১১৯৪৯৫, হটলাইন: ০১৭১১-৫৮৩৬২৩, ০১৭১৭-০৯৮৪২৮, চট্টগ্রাম অফিস- আবাসিক সম্পাদক: জাহিদুল করিম কচি, নাসিমন ভবন (দ্বিতীয় তলা) ১২১, নূর আহমেদ রোড, চট্টগ্রাম ফোন: ০৩১-২৫৫৭৫৪২ হটলাইন: ০১৭১১-৩০৭১৭১, E-mail : abnews13@gmail.com, Web : www.abnews24bd.com, Developed by i2soft Technology Ltd.
|
|