সোমবার ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৫ ভাদ্র ১৪৩১
 
মানিকগঞ্জে লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত গরু
প্রকাশ: শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৪, ৫:৩১ পিএম |

মনির হোসেন,মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জ জেলায় প্রায় প্রতিটি উপজেলার গবাদিপশুর চর্মজাতীয় ভাইরাসজনিত লাম্পি স্কিন রোগের দেখা দিয়েছে। খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

প্রতিদিন কোনো না কোনো এলাকা থেকে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গবাদিপশুর মৃত্যু হচ্ছে । 

জানা যায়, জেলাসহ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর অফিসে নেই চর্মজাতীয় ভাইরাস রোগ লাম্পি স্কিনের কোনো ভ্যাকসিন।

এই লাম্পিস্কিন নামের মহামারি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে এমনটাই দাবি প্রাণিসম্পদ দপ্তরের।  

প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, লাম্পি স্কিন রোগটি প্রথম ১৯২৯ সালে আফ্রিকার জাম্বিয়ায় শনাক্ত হয়।

২০২০ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশেও এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ওই সময়েও দেশের অনেক স্থানে বেশ কিছু গবাদিপশু মারা যায়। এখন পর্যন্ত লাম্পি স্কিন ভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন আসেনি, যার কারণে সচেতনতা ছাড়া কোনো উপায় নেই। 
 
আরও জানা যায়, জেলার প্রায় সব কয়েকটি উপজেলায় গবাদিপশুর মধ্যে লাম্পি স্কিন চর্মজাতীয় রোগের দেখা দিয়েছে। তবে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন কোনো না অঞ্চল থেকে গবাদিপশুর মৃত্যুর খবর আসছে। আক্রান্ত লাম্পি স্কিন রোগে গবাদিপশুগুলোর শরীরে জ্বর ও চামড়ার ভেতর থেকে গুটি-গুটি মাংসপেশী আকারে ফুলে উঠে। অনেক সময় ওই গুটি-গুটি ফোলা জায়গাগুলো ফেটে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। সেখান থেকেই পচনও ধরছে এবং গরু মারা যাচ্ছে। তবে আক্রান্ত গবাদিপশুগুলোর মধ্যে বাছুরগুলো এই চর্মরোগে আক্রান্ত হয়ে মারাও যায়। রোগ শনাক্ত হলেও তেমন চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন না পাওয়ায় প্রতিদিনই লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে গরুর মৃত্যু হচ্ছে। গত এক মাসে সাটুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় লাম্পি স্কিন রোগে মারা গেছে প্রায় দুই শতাধিক গরু। প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে জানা যায়, অনেকে আবার স্থানীয় (অনিবন্ধিত) পশু চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করাচ্ছেন। এই অনিবন্ধিত হাতুড়ে চিকিৎসকের ওষুধ সেবনেই বেশি গবাদিপশু মারা যাচ্ছে।

সাটুরিয়া উপজেলার বেঙ্গুয়া এলাকার মো: তাহের নামের এক খামারি বলেন, একদিন দেখি গরুর শরীরে ছোট ছোট গোটা উঠেছে। তখন স্থানীয় এক পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নেই। এ পর্যন্ত পাঁচ হাজার টাকার ওষুধ খাইয়েছি গরুকে, কিন্তু ভালো হয়নি।  

সদর উপজেলার জাগীর এলাকার আব্দুল রউফ বলেন, হঠাৎ করেই দেখি গরুর গলায় ছোট ছোট এক-দুটি করে গোটা দেখা যায়। তখন আমি উপজেলা পশু হাসপাতালে যাই। পশু হাসপাতাল থেকে আমাকে বলে এই রোগের কোনো চিকিৎসা তাদের ওখানে নাই। পরে চলে আসি,পরে বেসরকারিভাবে একটি কোম্পানির ভ্যাকসিন ব্যবহার করি এবং গরু অনেকটাই সুস্থতার দিকে আসে। আমার কথা হলো, সরকারি হাসপাতালে কোনো চিকিৎসা নাই কিন্তু বেসরকারি কোম্পানি কীভাবে ভ্যাকসিন দেয়! এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর আমি পাইনি।  

ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া এলাকার কায়েস মিয়া বলেন, লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে আমার প্রায় এক লাখ টাকা মূল্যের একটি গরু মারা গেছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে গেলে সেখানের পশু চিকিৎসকরা বলেন, এ রোগের কোনো ভ্যাকসিন এখনও সরকারিভাবে আবিষ্কার হয়নি।  

সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, লাম্পি স্কিন রোগের জন্য সরকারিভাবে কোনো ভ্যাকসিন বের হয়নি। যার ফলশ্রুতিতে আমরা লাম্পি স্কিন রোগ থেকে বাঁচাতে উঠান বৈঠকসহ সচেতনতা তৈরি করতে কাজ করে যাচ্ছি।

মানিকগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা কেন্দ্রের চিকিৎসক ডাক্তার মো. মনির হোসেন বলেন, লাম্পি স্কিন রোগ একটি ভাইরাসজনিত রোগ। আক্রান্তকারী গরুগুলোর দুধ উৎপাদন অনেকাংশেই কমে যায় এবং ওই গরুগুলোর ওজন ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। আক্রান্ত গবাদিপশুকে মশামাছি মুক্ত রাখতে হবে। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুস্থ পশুর থেকে দূরত্বে রাখতে হবে এমন পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।



এবিনিউজ টুয়েন্টিফোর বিডিডটকম//এফ//








সম্পাদক: শাহীন চৌধুরী
উপদেষ্টা সম্পাদক: হেলেনা বিলকিস চৌধুরী, নির্বাহী সম্পাদক: বরুণ ভৌমিক নয়ন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: সৈয়দ আফজাল বাকের

ঢাকা অফিস: ২/১ হুমায়ুন রোড (কলেজ গেট) মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭ ফোন: ৮৮-০২-৪৮১১৯৪৯৫, হটলাইন: ০১৭১১-৫৮৩৬২৩, ০১৭১৭-০৯৮৪২৮, চট্টগ্রাম অফিস- আবাসিক সম্পাদক: জাহিদুল করিম কচি, নাসিমন ভবন (দ্বিতীয় তলা) ১২১, নূর আহমেদ রোড, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ।
ফোন: ০৩১-২৫৫৭৫৪২ হটলাইন: ০১৭১১-৩০৭১৭১, E-mail : abnews13@gmail.com, Web : www.abnews24bd.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, এবিনিউজ | Developed By: i2soft