সদ্য সংবাদ :
জাতীয়

বাড়ছে না ছুটি, নির্দেশনা জারি

Published : Thursday, 28 May, 2020 at 2:48 PM
স্টাফ রিপোর্টার: সাধারণ ছুটি না বাড়িয়ে ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত নানান নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বয়স্ক ও অন্তঃসত্ত্বা নারী ছাড়া ১৫ জুন পর্যন্ত সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস করতে হবে।


মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, উক্ত নিষেধাজ্ঞাকালে কেউ কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবে না। উক্ত সময়ে শর্তসাপেক্ষে সীমিত পরিসরে নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত বিধি নিশ্চিত করে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও রেল চলাচল করতে পারবে। তবে সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে জারি করা নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে। প্লেন চলাচলেও বিধিনিষেধ তুলে দেয়া হয়েছে।


প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, উড়োজাহাজ কর্তৃপক্ষ নিজ ব্যবস্থাপনায় প্লেন চলাচলের বিষয় বিবেচনা করবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের আওতাধীন সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

বুধবার প্রথমে অবশ্যই সিদ্ধান্ত হয়েছিল ছুটি না বাড়িয়ে সীমিত আকারে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত এবং শিল্প-কলকারখানা খুলে দিলেও গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। এখন সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত হলো, ৩১ মে থেকে সীমিত আকারে সীমিত যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও ট্রেনও চলবে।

গতকাল রাতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন এই নির্দেশনা দিয়েছেন। গণপরিবহনে কতজন যাত্রী চলবে, তা ঠিক করবে স্থানীয় প্রশাসন।


এর আগে বুধবার বিকেলে সিদ্ধান্ত হয়, সরকারি ছুটি আর বাড়ছে না। সীমিত আকারে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত এবং শিল্প-কলকারখানা খুলে দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব কর্মকাণ্ড চালাতে হবে। তখনই বলা হয়েছিল গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ থাকছে। অবশ্য কর্মস্থলে যাওয়ার গাড়ি ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলতে পারবে। এ ছাড়া কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিমান চলাচল করতে পারবে। কিন্তু গণপরিবহন বন্ধ রেখে অফিসে চলাচলসহ অন্যান্য বিষয়ে কী হবে, সেটি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়।


করোনাভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। ইতিমধ্যে সাত দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বাড়ানো হয়। এক মাস রোজা শেষে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়ে গেল দু’দিন আগে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সর্বশেষ ঘোষিত সাধারণ ছুটিও শেষ হচ্ছে তিন দিন পর, ৩০ মে। এ অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে ছুটির বিষয়ে এমন সিদ্ধান্ত এল।


বুধবার বিকেলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৩০ মে ছুটি শেষ হচ্ছে। এরপর নাগরিক জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্থনৈতিক কমকাণ্ড এবং অফিস-আদালত সীমিত আকারে খুলে দেওয়া হবে। সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ নিজ ব্যবস্থায় সীমিত আকারে খুলতে পারবে। সে ক্ষেত্রে বয়স্ক, অসুস্থ ও গর্ভবতী কর্মীরা কর্মস্থলে যাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ১৩ দফা মানতে হবে।


প্রতিমন্ত্রী বলেন, দোকানপাট, ব্যবসাকেন্দ্র আগের মতো সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে এ ক্ষেত্রে আরও কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আপাতত বন্ধই থাকবে। তবে অনলাইন বা অন্যান্য ভার্চ্যুয়াল ক্লাস অব্যাহত থাকবে।


সরকারি সূত্রগুলো বলছে, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অর্থনীতির চাকা সচল রাখাও সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আবার করোনা পরিস্থিতিও অবনতি হচ্ছে। এই চিন্তা থেকেই সীমিত আকারে সবকিছু খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।



সর্বশেষ ছুটির প্রজ্ঞাপনের সময়ই কিছু ক্ষেত্রে শিথিল করা হয়েছিল। দোকানপাট, তৈরি পোশাক কারখানাসহ কিছু প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকও চালু আছে। অফিসও প্রয়োজনে খোলা রাখা যাচ্ছে।


প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বুধবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ৩৮ হাজার ২৯২ জন। তাদের মধ্যে ৫৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭৯২৫ জন।


চীনের উহান থেকে বিস্তার শুরু করে গত চার মাসে বিশ্বের ২১২টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে করোনার প্রভাব কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে মহামারি রূপ নিয়েছে।


করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নেয়া হয়েছে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। অধিকাংশ দেশেই মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে মানুষের চলাফেরার ওপর বিভিন্ন মাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। কোনো কোনো দেশে আরোপ করা হয়েছে সম্পূর্ণ লকডাউন, কোথাও কোথাও আংশিকভাবে চলছে মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম। এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধেক মানুষ চলাফেরার ক্ষেত্রে কোনো না কোনো মাত্রায় নিষেধাজ্ঞার ওপর পড়েছেন।



২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। নিউমোনিয়ার মত লক্ষণ নিয়ে নতুন এ রোগ ছড়াতে দেখে চীনা কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।



করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।




 এবিনিউজ টুয়েন্টিফোর বিডিডটকম//এফ//






জাতীয় পাতার আরও খবর


  • সম্পাদক: শাহীন চৌধুরী
    ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: হেলেনা বিলকিস চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক: শঙ্কর মৈত্র, নির্বাহী সম্পাদক: বরুণ ভৌমিক নয়ন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: সৈয়দ আফজাল বাকের, ঢাকা অফিস: ২/১ হুমায়ুন রোড (কলেজ গেট) মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭ ফোন: ৮৮-০২-৯১১৯১১৬, হটলাইন: ০১৭১১-৫৮৩৬২৩, ০১৭১৭-০৯৮৪২৮, চট্টগ্রাম অফিস- আবাসিক সম্পাদক: জাহিদুল করিম কচি, নাসিমন ভবন (দ্বিতীয় তলা) ১২১, নূর আহমেদ রোড, চট্টগ্রাম ফোন: ০৩১-২৫৫৭৫৪২ হটলাইন: ০১৭১১-৩০৭১৭১, E-mail : abnews13@gmail.com, Web : www.abnews24bd.com, Developed by i2soft Technology Ltd.
    Close