শিপংকর শীল: প্রকাশনা ও বিক্রি দুই দিকেই পিছিয়ে ছিল এবারের মেলা লকডাউনের কারণে নির্ধারিত সময়ের দুইদিন আগেই সোমবার (১২ এপ্রিল ) শেষ হলো। এবারের অমর একুশে বইমেলা।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ মঙ্গলবার থেকে বইয়ের পসরা সাজিয়ে বসবে না দোকানীরা। গত ২৬দিনের মত থাকবেনা পাঠকদের জন্য অধীর অপেক্ষা। লেখক,পাঠক, দর্শনার্থী ও বইপ্রেমীদের দীর্ঘ একবছরের অপেক্ষায় রেখে স্বাধীনতার স্মৃতিবিজড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণ ছাড়লেন প্রকাশকরা। শেষ দিনেও আশা পূরণ হয়নি প্রকাশকদের। বইপ্রেমীরা ছিলনা বলে ছিল না বিকিকিনি। হয়নি স্বপ্নপূরণ। মিটেনি আশা। বিষাদ, ব্যর্থতা, মনখারাপ ও বেদনাই ছিল বিদায়বেলার সঙ্গী।
প্রকাশকরা জানান, প্রতিবাদের মুখে পাওয়া এই মেলা তাদের রঙ্গিন স্বপ্নকে ধূসর করেছে। যে ক্ষতি হয়েছে আগামী কয়েকবছরেও সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠা যাবেনা বলে মনে করেন তারা। তারা বলেন, করোনা পরিস্তিতিতে আমাদের যতটুকু ক্ষতি করেছে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে বাংলা একাডেমির বেঁধে দেওয়া দুপুর ১২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত পরিবর্তিত সময়সূচি।
এদিকে, সোমবার শেষ দিনেও মেলাজুড়ে ছিল সুনসান নীরবতা। অন্যবার সমাপনী আয়োজন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লেজার শো’ ও পুরস্কার প্রদানের মধ্য দিয়ে মেলার সমাপ্তি ঘটলেও এবার তথ্যকেন্দ্র থেকে সাদামাটা ঘোষণা দিয়েই মেলার পর্দা নামানো হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ৩টার মধ্যে স্টল সরিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলা একাডেমি থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে মেলা প্রাঙ্গণ থেকে বইপত্র ও মালামাল সরিয়ে নিতে এবং গোছাতেই বেশি ব্যস্ত দেখা গেছে প্রকাশনা সংস্থার কর্মরতদের।
১০০ কোটি টাকার বই কেনার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির এবারের মেলায় প্রকাশকরা ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছেন। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ১০০ কোটি টাকার বই কিনতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি।
বিকেলে মেলা প্রাঙ্গনের ‘লেখক বলছি’ মঞ্চে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা সরকারের কাছে এই অনুরোধ জানায়।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সহ সভাপতি শ্যামল পাল।
তিনি জানান, গতবারের মেলায় বাংলা একাডেমি ও প্রকাশকরাসহ বিক্রি করে ৮২কোটি টাকার বই। আর এবার প্রকাশকরা মাত্র ৩ কোটি ১১ লাখ টাকার বই বিক্রি করেছে। এতে করে তারা পথে বসেছে। যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত’ প্রকাশকরা তাদের কাছ থেকে ১০০ কোটি টাকার বই কেনার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানায়।
প্রকাশনা ও বিক্রি দুই দিকেই পিছিয়ে ছিল এবারের মেলা প্রকাশনা ও বিক্রি দুই দিকেই পিছিয়ে ছিল এবারের মেলা। এবারের মেলার শেষ দিনে নতুন বই প্রকাশিত হয় ৬৪টি এবং মেলায় মোট নতুন বই প্রকাশ হয় ২ হাজার ৬৪০টি। আর গতবার বই প্রকাশিত হয় ৪ হাজার ৯১৯টি, অর্থাৎ গতবারের তুলনায় এবার ২হাজার ২৭৯টি বই কম প্রকাশ হয়েছে। বাংলা একাডেমি ও প্রকাশকদের বিক্রিসহ গতবার ৮২ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে। আর এবার মাত্র ৩ কোটি ১১ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ গতবছরের চেয়ে এবার ৭৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা কম বিক্রি হয়েছে।
তবে, বাংলা একাডেমি তাদের এবারের মেলার বিক্রির কোন হিসাব গণমাধ্যমকে জানায়নি।
এবিনিউজ টুয়েন্টিফোর বিডিডটকম//এফ//